উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ১৮/০৯/২০২৫ ৮:০৩ এএম

জসিম উদ্দিন টিপু,টেকনাফ::
চলতি আমন মৌসুমে টেকনাফে অন্তত: ৩শ হেক্টর তথা ৭শ ৪১একর লবণ মাঠ ধান চাষের আওতায় এসেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগীতা পেলে আগামী বর্ষা মৌসুম থেকে আরো অনেক বেশী পরিমাণে লবণ মাঠ ধান চাষের আওতায় চলে আসবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরা মনে করেন, আগামী বর্ষার আগে চাষীদের সাথে ইউনিয়ন ও এলাকা ভিত্তিক ক্ষুদ্র বা বৃহতাকারে লব সহিঞ্চু জাতের ধানের বীজ এবং লবণ মাঠে ধান চাষের বিষয়ে উদ্ধুদ্ধ করলেই কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়বে। এছাড়া কৃষি প্রণোদনা হতে বীজ ও সার সরবরাহ করলে টেকনাফের প্রায় সব লবণ মাঠ পর্যায়ক্রমে ধান চাষের আওতায় চলে আসবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। এতে করে কৃষকরা যেমনি লাভবান হবেন। তেমনি তারা স্থানীয়ভাবে ধানের চাহিদার যোগান দিতে পারবেন বলে মনে করেন। লব সহিঞ্চু ও স্বল্প মেয়াদী জাতের ধান এবং সময়মতো কৃষি প্রণোদনা পেলে লবণ মাঠে ধান চাষের বিস্তার ঘটবে বলে মনে করেন টেকনাফের কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানাগেছে, এবছর (বর্ষা মৌসুমে) টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে ১শ হেক্টর, হ্নীলাতে ১শ হেক্টর,সদর ইউনিয়নে ৩০ হেক্টর ও সাবরাং ইউনিয়নে ৭০হেক্টরসহ মোট ৩শ হেক্টর তথা ৭শ ৪১একর লবণ মাঠে ধানের চাষ করা করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে লবণ মাঠে উফষী জাতের ব্রি ধান-৭৫ সবচেয়ে বেশী চাষ করা হয়েছে। এছাড়া উফষী জাত ব্রি ধান-৩৩, উফষী জাত ব্রি ধান-৪৯ ও স্থানীয় জাত বিন্নির আবাদ করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কর্পোরেশন তথা বিসিকের তথ্য মতে টেকনাফে ৪হাজার ৫শ ৮২একর তথা ১হাজার ৮শ ৫৫হেক্টর জমিতে লবণ চাষ করা হয়। সে হিসেবে আরো ৩হাজার ৮শ ৪১একর তথা ১হাজার ৫শ ৫৫হেক্টর জমি বর্ষা মৌসুমে অনাবাদী থাকে। বর্ষা মৌসুমে অনাবাদী লবণ মাঠ এমন সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ ও কারিগরী সহযোগীতা পেলেই উল্লেখিত জমিও বর্ষা মৌসুমে ধান চাষের আওতায় চলে আসবে বলে কৃষি সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
হ্নীলা পানখালী এলাকার প্রসিদ্ধ কৃষক খলিল আহমদ, চলতি মৌসুমে ২একর ৪০শতক লবণ মাঠে ধানের আবাদ করার কথা জানান। তিনি জীবনে কখনো কৃষি প্রণোদনা হতে সহযোগীতা পাননি জানিয়ে উল্টো উচ্চ মূল্যে ইউরিয়া সার ক্রয়ের মতো গুরুতর অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। এছাড়া হ্নীলা হোয়াকিয়াপাড়া এলাকার কৃষক ইব্রাহীম এই প্রতিবেদককে জানান, ৩একর লবণ মাঠে ধান চাষ করেছি। তিনিও কৃষি বিভাগের অসহযোগীতার কথা জানিয়ে বলেন, কষ্ট করে বীজ সংগ্রহ করে রোপন করেছি। তবে বিসিআইসি সার ডিলাদের উচ্চমুল্যে সার বিক্রয়ের অভিযোগের কথা জানিয়ে বলেন, বেশী দামের কারণে জমিতে সার প্রয়োগে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছি। রঙ্গিখালী এলাকার কালাবদা ও লেদা এলাকার কৃষক জোবায়ের এই প্রতিবেদককে জানান,লবণ মাঠে ধান চাষ করেছি। কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রণোদনার আওতায় কোন ধরণের সহযোগীতা পায়নি। তবে তারা খুশীর খবর জানিয়েছেন, এবছর আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় লবণ মাঠে চাষকৃত জমিতে আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম জানান,লবণ মাঠে ধান চাষের উজ্জ্বলতা সম্ভবনা রয়েছে। তবে তিনি লব সহিঞ্চু স্বল্প মেয়াদী জাতের ধান উদ্ভাবনের জন্য সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্টানের পরিদর্শনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি লবণ মাঠে ধান চাষের বিস্তার ঘটাতে প্রান্তীক কৃষকদের বিভিন্ন ধরণের পদ্ধতির মাধ্যমে উদ্ধুদ্ধের কথাও জানান।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিসার মো: হুমায়ুন কবির জানান,লবণ মাঠে ধান চাষ করতে উপজেলা কৃষি অফিস প্রতিনিয়িত কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করছে এবং আগামী মৌসুমেও ব্যাপকহাওে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করা হবে। তিনি কৃষি প্রণোদনা হতে লবণ মাঠে ধান চাষে আগ্রহী কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন।##

পাঠকের মতামত

কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় পরিচয় যাচাইহীন রোহিঙ্গা ভাড়া, বাড়ছে শঙ্কা

মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও সেনা জান্তার সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ইউনাইটেড নেশন টিম

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইউনাইটেড নেশন ফোরাম বাংলাদেশ স্টাডি প্রোগ্রাম (BSP) এর ...

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্ম ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয়” শীর্ষক আন্তঃধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ...